তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একটি পৃথক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে চায় সরকার। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেই সাংবাদিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে।
রোববার (৪ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ইউনেস্কো ঢাকা অফিস এবং সুইডেন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘Brave New Bangladesh: Reform Roadmap for Press Freedom’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “শুনলে অবাক হবেন, এক-দুইটি মিডিয়া হাউস বাদে বাকি কেউই কর দেয় না। অধিকাংশ মিডিয়া হাউসের রাষ্ট্রকে কর দেওয়ার কোনও নীতিই নেই। তারা রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে, যা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নিজেও সাংবাদিকতা করতে চেয়েছিলাম, পারিনি, তবে আমি সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের পজিটিভ এপ্রোচ গ্রহণ করতে হবে।”
মাহফুজ আলম জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর (বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার, বাসস) একত্রিকরণ, মিডিয়ার লাইসেন্স পুনর্মূল্যায়ন এবং বিজ্ঞাপন রেট মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “সম্প্রচার নীতিমালা খুব শিগগিরই চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তাদের সুরক্ষা জরুরি হলেও মানসম্পন্ন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে হবে। ৩০-৪০টি পত্রিকার প্রয়োজন নেই। স্থানীয় সাংবাদিকদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস নির্ধারণে আলোচনা করা হবে।”
তিনি আরও জানান, টেলিভিশন ও অনলাইন পত্রিকার লাইসেন্স ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে প্রস্তাবিত তথ্য কমিশনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক ঐক্যমত্য ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্ভব নয়। আইন প্রণয়ন করলেও যদি সরকারগুলো তা বাস্তবায়ন না করে, তবে সাংবাদিকদের হয়রানি ও মামলার সমস্যাগুলো সমাধান হবে না।”
অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা প্রধান রেজোয়ানুল হক রাজা, ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, ইউনেস্কোর প্রতিনিধি সুজান ভাইজ এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের শীর্ষ সাংবাদিক, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।