ঢাকার মগবাজার এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে দম্পতি ও তাদের ১৭ বছর বয়সী সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে তাদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে খাদ্যে বিষক্রিয়াকে সম্ভাব্য বলে মনে করছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. জাকিয়া তাসনিম বলেন, “তিনটি মরদেহের লক্ষণ দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদেরও মনে হয়েছে এটি খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত মৃত্যু। তবে নিশ্চিতভাবে জানতে রক্ত ও ভিসেরা নমুনা পরীক্ষার জন্য মহাখালীর পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এর আগে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক মো. জালাল উদ্দিন নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। তিনি জানান, “তিনটি লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়াই মৃত্যুর কারণ, তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
নিহতরা হলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার মনির হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৪০) এবং তাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলে আরাফাত হোসেন নাঈম (১৭)।
জানা যায়, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গত শনিবার (২৮ জুন) তারা মগবাজারের ‘হোটেল সুইট স্লিপ’-এ ওঠেন। পরদিন সকালে এক আত্মীয় তাদের খোঁজ নিতে গিয়ে স্বপ্নাকে বমি করতে দেখেন। দ্রুত স্বপ্না ও নাঈমকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণ পর মনির হোসেনও অসুস্থ হয়ে মারা যান।
ঘটনার পর মনির হোসেনের বাড়ির কেয়ারটেকার রফিকুল ইসলামসহ হোটেল সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মনিরের সঙ্গে থেকেই হোটেলে ওঠেন রফিকুল। তিনি দাবি করেন, মনিরকে সঙ্গে নিয়েই খাবার কিনেছিলেন। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রফিকুল একাই খাবার নিয়ে হোটেলে ঢুকছেন।
রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানিয়েছেন, “মামলার তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ চলছে। প্রাথমিকভাবে বিষক্রিয়া বা ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ মেশানোর সন্দেহে তদন্ত চলছে।”
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।