সৌদি আরবে পাড়ি জমানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল। আগামী ২ মে ছিল ফ্লাইট। কিন্তু তার আগেই সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারালেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ইয়াছিন আরাফাত শাকিল (২৮)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে বেগমগঞ্জের ছয়ানি ইউনিয়নের গঙ্গাবর বাজারে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইসলামীয়া মার্কেটের সামনে থেকে এক তরুণকে অপহরণের চেষ্টা করলে বাধা দেন শাকিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
নিহত শাকিল উপজেলার সোলাইমান খোকনের ছেলে। তিনি একজন থাই অ্যালুমিনিয়াম মিস্ত্রি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
ঘটনার সময় শাকিলসহ কয়েকজন বাজারে বসে চা পান করছিলেন। হঠাৎ করে পাঁচজন অস্ত্রধারী এসে লাবিব নামের এক তরুণকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। তখন শাকিল ও আরও কয়েকজন প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে এবং তার ছোট ভাই শুভকে কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয়রা আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর জনতা ধাওয়া করে তিন সন্ত্রাসীকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। আটককৃতরা হলো—মোরশেদ আলম (২৫), মো. জীবন (২৪) ও মো. মনির (২২)। পুলিশ জানায়, তাদের মধ্যে দুজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং একজনকে ঢাকায় পাঠিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। অস্ত্র উদ্ধারে পাশের একটি ডোবায় তল্লাশি চালানো হলেও এখনো কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
শাকিলের পরিবার জানায়, জীবিকার তাগিদে তিনি সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঢাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে এসেছেন, তার একটি সাত মাস বয়সী কন্যাসন্তান রয়েছে।
শোকাহত পরিবার সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান জানান, নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং দাফনের পর মামলা প্রক্রিয়া শুরু হবে।