ছোট্ট হাসি আর কৌতূহল ভরা চোখে মা দেখার আশায় বের হয়েছিল ৮ বছরের আনিসা। কিন্তু এক মুহূর্তে বদলে গেল তার জীবনের সমস্ত আশা।
বাবা হারুন মিয়া (২৮), সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের শফিক মিয়ার পুত্র, গত শনিবার সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিলেট শহরে যাচ্ছিলেন। উদ্দেশ্য ছিলো ছোট বোনের আইইএলটিএস পরীক্ষার পর বড় মেয়ে আনিসাকে মায়ের সঙ্গে দেখা করানো।
প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন হারুন মিয়া নিজেই। গাড়িতে ছিলেন আনিসা, তার তিন ফুফু রাইমা বেগম, মুন্নি বেগম, পান্না বেগম, এবং সামনে বসেছিলেন হারুন মিয়া ও ভগ্নিপতি মুকিত মিয়া।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দয়ামীর বাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের সামনে একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই হারুন মিয়া ও তার ছোট মেয়ে আনিসা নিহত হন। এছাড়া গাড়িতে থাকা তিন বোন ও ভগ্নিপতি গুরুতর আহত হন। আহতরা বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রাতে উমরপুর ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামে নিজ বাড়ি উঠনে বাবা হারুন মিয়া ও মেয়ে আনিসার জানাযা সম্পন্ন হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে, হবিগঞ্জ-সিলেট এক্সপ্রেস বাসের চলাচল বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গত রবিবার দুপুরে উপজেলার গোয়ালাবাজারে উপজেলাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,দীর্ঘদিন ধরে হবিগঞ্জ থেকে সিলেটগামী এক্সপ্রেস বাসগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, প্রাণ যাচ্ছে নিরীহ মানুষের। বেশিরভাগ সময়ই বাসগুলো ট্রাফিক আইন উপেক্ষা করে।
বক্তারা হবিগঞ্জ এক্সপ্রেসের সব বাস চলাচল নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন এবং ঘাতক বাসচালকের ফাঁসির দাবি জানান। এছাড়া তারা প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান, নিয়মিত মনিটরিং, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে।
পরে উত্তেজিত জনতা একটি হবিগঞ্জ এক্সপ্রেসের বাস ভাঙচুর করেন এবং প্রায় দেড় ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।